বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম :
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের পর প্রথম একসাথ হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিচারপতি এস কে সিনহা, করলেন ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়।
শনিবার গণভবনে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বোন শেখ রেহানার সঙ্গেও একান্ত আলাপ করতে দেখা যায় সরকারি দলের নেতাদের সমালোচনার মুখে থাকা বিচারপতি সিনহাকে।

গত ১ অগাস্ট রায়ের পর গণভবনে শুভেচ্ছা বিনিময়ের এই অনুষ্ঠানে প্রথম দেখা হল নির্বাহী বিভাগের প্রধানের সঙ্গে বিচার বিভাগের প্রধানের।

এর আগে গত ১৫ অগাস্ট জাতীয় শোক দিবসে ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিতে গিয়েছিলেন বিচারপতি সিনহা; তবে সেদিন তিনি জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়েই সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন।

বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে নিতে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধন বাতিলের রায়ে যে পর্যবেক্ষণ বিচারপতি সিনহা দিয়েছেন, তা নিয়েই ক্ষমতাসীনদের রোষের মুখে তিনি।

এতে বঙ্গবন্ধুকে খাটো করা হয়েছে অভিযোগ তুলে প্রধান বিচারপতির অপসারণ চাইছেন আওয়ামী লীগের নেতারা; তাকে বাংলাদেশ ছাড়ার আহ্বানও জানানো হচ্ছে।

বঙ্গবন্ধুকন্যা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা নিজেও প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণকে ‘অবান্তর ও স্ববিরোধী’ আখ্যায়িত করে বিচারপতি সিনহার সমালোচনা করেন।

একে যখন অনেকে রাষ্ট্রের দুই অঙ্গ বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের রেষারেষি হিসেবে দেখছে, তখনই ঈদের শুভেচ্ছা অনুষ্ঠানে মিলিত হলেন দুই বিভাগের প্রধান।

বেলা সোয়া ১১দিকে বিচারপতি সিনহা যখন গণভবনে পৌঁছান তখন প্রধানমন্ত্রী গণভবনের মাঠে কূটনীতিকদের সঙ্গে ঘুরে ঘুরে কথা বলছিলেন। তার আগে সর্বস্তরের নাগরিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে প্যান্ডেলের উত্তর প্রান্তে প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, প্রধান বিচারপতিসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বসার স্থান নির্ধারিত ছিল। প্রধানমন্ত্রীর সোফার বাঁ পাশে ছিল প্রধান বিচারপতির বসার স্থান।

বিচারপতি সিনহা ঢুকে তার জন্য নির্ধারিত সোফার কাছে গিয়ে দাঁড়ালে শেখ রেহানাও সেখানে যান। প্রায় মিনিট পাঁচেক দুজনকে কথা বলতে দেখা যায়।
ওই সময় তাদের কাছে কেউ ছিল না। দুজন থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভী, যিনি রায়ের পর অসন্তোষের প্রেক্ষাপটে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী কূটনীতিক ও উচ্চ আদালতের বিচারপতির সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর তার জন্য নির্ধারিত সোফায় গিয়ে বসবার আগে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

প্রধানমন্ত্রী সোফায় বসে প্রথমে ডান পাশের সোফায় বসা স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলেন। এরপর ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান এসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
অনুষ্ঠানের প্রায় শেষ দিকে প্রধানমন্ত্রী তার সোফা থেকে উঠে দাঁড়ালে সবাই উঠে দাড়ান। তখনই প্রধানমন্ত্রী আর প্রধান বিচারপতির মধ্যে কথা হয়। হাসিমুখে কথা বলতে দেখা যায় হাসিনাকে; হাস্যোজ্জ্বল এস কে সিনহার পাশে তখন দাঁড়িয়েছিলেন আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।

কী কথা তাদের মধ্যে হয়েছে, তা জানা যায়নি।

এরপর বিচারপতি এস কে সিনহাসহ বিচারপতিদের সঙ্গে ছবি তোলেন প্রধানমন্ত্রী।